শিক্ষা হচ্ছে ব্যক্তির আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন, আর সাহিত্য সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক। একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের আচরণের বাঞ্চিত পরিবর্তনের মাধ্যমে যেমন শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করে তেমনি সৃজনশীলতা বিকাশের মাধ্যমে মেধাকে করে তোলে শাণিত এবং মননশীলতাকে করে পরিশীলিত। সাহিত্য সংস্কৃতি ও মননশীলতা চর্চা উত্কৃষ্ট মানব মনের পরিচায়ক। সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে ব্যক্তি তার সুপ্ত সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়। অনন্তকাল ধরে সাহিত্যিক স্বীয় কীর্তির মাঝে বেঁচে থাকেন। সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, শেক্সপীয়ার শত শত বছর আগে পরলোক গমন করেছেন। কিন্তু তাদের লেখনী আজো এতটুকু মলিন হয়নি, তাদের সাহিত্য চর্চার ফসল আজও জগতবাসীকে অনুপ্রাণিত করে। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল প্রমুখ কবি তাদের লেখনীর জন্যই আজো কোটি কোটি বাংলাভাষীর হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত। সবাই বড় সাহিত্যিক হতে পারে না কিন্তু শিক্ষিতজন মাত্রই ছাপার অক্ষরে নিজেদের অনুভূতি, ভাবনা প্রকাশ করতে চায়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল চিন্তা ভাবনা ও অনুভূতি প্রকাশের এক অনন্য সুযোগ বিদ্যালয় বার্ষিকী।
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বার্ষিকী "প্রবাহ-২০২৩" কচিকাঁচা শিক্ষার্থীদের সাহিত্য চর্চার উদ্দেশ্যেই নিবেদিত। শিক্ষার্থীনের কচি হাতের লেখায় ভাবের ব্যাপ্তি ও ভাষার দক্ষতার পূর্ণতা আশা করা যায় না। কিন্তু তাদের লেখনী ভবিষ্যাতের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এখানে যারা লিখেছেন তারা কেউ প্রতিষ্ঠিত লেখক নন। তাদের লেখা শিল্পমান বিচারে হয়তো উৎকর্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু নিরন্তর প্রয়াস নিশ্চয়ই পুষ্পিত হয়ে এক সময় সৌরভ ছড়াবে
সবার অন্তরে, ক্ষুদে এ সাহিত্যিকদের লেখায় মনের ক্ষুধা হয়তো মিটবে না। কিন্তু তাদের এ প্রয়াসকে উৎসাহিত করে সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য পাঠককূলের প্রতি রইল বিশেষ অনুরোধ। যাদের ঘামে-শ্রামে, মেধায় আর মননে এ বার্ষিকী প্রকাশিত হল তাদের জানাই অভিনন্দন নিরন্তর। শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে যারা ও বার্ষিকী সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের প্রতিও রইল কৃতজ্ঞতা। শিক্ষার্থীদের সৃষ্টির এই স্বভাবজাত আকরিক সৌন্দর্য যদি নাইকে ছিটেফোটা আনন্দও দান করতে পারে তাহলেই এ শ্রম সার্থক হবে ও এ প্রয়াস সফল বলে বিবেচিত হবে।
প্রতিটি শিক্ষার্থী সফল ও আলোকিত মানুষ হোক কায়মনোবাক্যে এ আশীর্বাদ করছি।